সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
কোটা আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত থাকায় লক্ষ্মীপুরে সাইফ মোহাম্মদ আলী নামে এক কলেজছাত্রকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় আতংকিত হয়ে স্টোক করে মারা যান তার বাবা সামছুল আলম মামুন (৫২)।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) ভোররাতে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কালু হাজী সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
আটক সাইফ মোহাম্মদ আলী লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র।
তাকে নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে এদিন দুপুরে আদালতে তোলা হয়। বিকেল ৫টা পর্যন্ত একজন আইনজীবীর জিম্মায় তাকে বাবার জানাজার নামাজে অংশ নিতে জামিন দেয় আদালত।
পরিবারের লোকজন জানায়, সাইফ মোহাম্মদ আলী বিরুদ্ধে থানায় কোনো মামলা ছিল না। মঙ্গলবার রাতে সদর থানা পুলিশ কালুহাজী সড়কে অবস্থিত সামছুল আলম মামুনের নিজ বাসায় তার ছেলে সাইফ মোহাম্মদ আলীকে ধরতে পুলিশ অভিযান চালায়। এসময় সাইফ মোহাম্মদ আলী ঘুমে ছিল। তাকে ঘুম থেকে তুলে আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় বাবা সামছুল আলম মামুন বাধা দেয়। ছেলের বিরুদ্ধে কোনো মামলা বা ওয়ারেন্ট আছে কিনা, সে বিষয়টি পুলিশের কাছে জানতে যান। তবে পুলিশ কোনো উত্তর না দিয়ে সাইফকে আটক করে নিয়ে যায়। এসময় ছেলের দুঃখে ও আতঙ্কিত হয়ে স্টোক করেন তিনি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার।
এদিকে সাইফকে পুলিশের দায়েরকৃত পূর্বের নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তার জামিন আবেদন করেন আইনজীবীরা। আদালতের বিচারক আবু সুফিয়ান মো. নোমান রাষ্ট্র এবং বিবাদী পক্ষের আইনজীবীর কথা শুনে সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোহাম্মদ সামছুল আলমের জিম্মায় বিকেল ৫টা পর্যন্ত জামিন দেন। এ সময়টাতে বাবার জানাজার নামাজে অংশ নেয় সাইফ মোহাম্মদ আলী।
তার আইনজীবী মহসিন কবির মুরাদ বলেন, সাইফ মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না। তাকে পুলিশের দায়েরকৃত নাশকতা ও বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। মামলা বা ওয়ারেন্ট ছাড়াই তাকে বাসা থেকে আটক করা হয়। এসময় তার বাবা সামছুল আলম মামুন ছেলেকে না নিতে পুলিশকে বাধা দেয়। এরপর পুলিশ সাইফকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় আতঙ্কিত হয়ে বাসায় মামুন মারা যায়। পরে আদালতে সাইফ মোহাম্মদ আলীর জামিন আবেদন করা হলে আদালত জানাজায় অংশ নিতে বিকেল ৫টা পর্যন্ত জামিন দেন।
সাইফ মোহাম্মদ আলীর মা তাহমিনা আক্তার নাসরিন অভিযোগ করে বলেন, সাইফ কোনো রাজনীতির সাথে জড়িত নয়। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না। পুলিশ জোরপূর্বকভাবে ছেলেকে ধরে নিয়ে যায়। এসময় সাইফের বাবা বাধা দিলে আতঙ্কিত হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায় সে। ছেলের বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে বিস্ফোরক ও নাশকতার মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে ছেলের মুক্তির দাবি জানান তিনি।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াছিল মজুমদার ফারুক বলেন, নাশকতা ও বিস্ফোরক মামলায় সাইফ মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে তার বাবার মৃত্যুর বিষয়টি সকালে শুনেছি। সাইফ ছাড়াও আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সহিংসতা ও নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে।
আরএ