সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
কুমিল্লায় কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশের দুইটি গাড়ি ভাংচুর ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় পুলিশের ৬টি ও কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগ ২টি মামলা দায়ের করেন। এসব মামলায় আট হাজার আসামি করা হয়। বেশিরভাগ আসামি বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী।
এদিকে কুমিল্লা মহানগর ও জেলায় বিএনপি-জামায়াত নেতাদের মধ্যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছে। গত এক সপ্তাহে জেলাজুড়ে চিরুনি অভিযান চালিয়ে পুলিশ ১৬০ জনকে গ্রেপ্তার করছে। তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। নেতাকর্মীদের না পেলে বাড়ির অন্য সদস্যদের হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন দলের সিনিয়র নেতারা।
স্থায়ীয় সূত্র জানায়, কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে কুমিল্লায় গত কয়েকদিনে দুই একটি ঘটনা ছাড়া বড় কোনো নাশকতার খবর পাওয়া যায়নি। এছাড়া, কুমিল্লার কয়েকটি উপজেলা পর্যায়ে দুই একটি জায়গায় বিক্ষোভ সমাবেশ করলেও সেগুলো ছিল নিরুত্তাপ। এরপরেও কুমিল্লা মহানগর ও জেলা বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পুলিশি তল্লাশির অভিযোগ করেছেন দলীয় নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, এসব নেতাকর্মীদের পরিবার আতঙ্কে দিন অতিবাহিত করছেন।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপি সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত বিএনপির অন্তত শতাধিক নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে বেশিরভাগ নেতাকর্মীকে পুরোনো একাধিক নাশকতা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এছাড়া জামায়াতেরও বেশ কয়েকজন জেলা পর্যায়ের নেতাকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা যায় বিভিন্ন সূত্র থেকে।
বিএনপির একাধিক নেতাকর্মী এই প্রতিবেদককে জানান, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক তোফায়েল আহমেদ কাউসার ও শহীদ উল্লাহ রতন, কুমিল্লা জেলা আহ্বায়ক কমিটির সিনিয়র সদস্য সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, মহানগর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক খলিলুর রহমান বিপ্লবসহ আরও অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া, কুমিল্লা নগরীর ৩নং ওয়ার্ড জামায়াতের সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, ৮নং ওয়ার্ডের জামায়াতের সভাপতি ইকরামুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন জামায়াত নেতাকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শফিউল আলম রায়হান জানান, সরকারের নির্বিচারে মানুষ হত্যার প্রতিবাদে আমরা গত ১৯ জুলাই শান্তিপূর্ণ মিছিল করার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। সে সময় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা করে। এসময় তারা বিভিন্ন নেতাকর্মীর বাড়ি ও অফিস ভাংচুর করে।
তিনি আরও জানান, হামলায় ইউসুফ মোল্লাহ টিপুসহ অনেকে গুলিবিদ্ধ হন অন্তত ১০ জন। এ ঘটনায় ২০ জন আহত হয়। কিন্তু যারা হামলা চালিয়েছে তারাই উলটো বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। তারা নিজেদের মিস ফায়ারে আহত হয়েছে, কিন্তু দোষ চাপিয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীর ওপর।
এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাজী ইয়াসিন ও মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব ইউসূফ মোল্লা টিপুকে একাধিকবার কল দিয়েও পাওয়া যায়নি।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্ল্যাহ খোকন বলেন, তাদের (বিএনপি) অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। ঐ দিন আমাদের নেতাকর্মী ওপর হামলা করেছে বিএনপি-জামায়াত। আমরা মামলা দিয়েছি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) নাজমুল হাসান বলেন, আমাদের চিরুনি অভিযান চলমান রয়েছে। সকল নাশকতাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ১৬০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরএ