সম্পাদক: আরিফ হাসান
দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ কার্যালয়ে প্রকাশ্যে দুই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। এতে চারদিকে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সন্ধ্যার পর এই ঘটনার পাঁচ মিনিটের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ওই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আগেও নানা অনিয়মের অভিযোগ ছিল বলে জানিয়েছেন পরিষদের চেয়ারম্যান নিজেও।
ভিডিওতে থাকা দুই প্রকৌশলীর একজন হলেন জেলা পরিষদের বর্তমান উপসহকারী প্রকৌশলী কাঞ্চন কুমার পালিত এবং অপরজন বদলি হওয়া সাবেক সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল কুদ্দুস। জেলা পরিষদে সহকারী প্রকৌশলীর পদটি গত কয়েক মাস ধরে খালি থাকায় কাঞ্চন কুমার এ পদেও অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
ভিডিওতে দেখা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ কার্যালয়ে জহির নামের ঠিকাদারের কাছ থেকে ঘুষের টাকা নিতে দর কষাকষি চলছে উপ-সহকারী প্রকৌশলী কাঞ্চন কুমার পালিত ও সাবেক সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল কুদ্দুসের সঙ্গে। ভিডিও ধারণকারী জহির নামের ওই ব্যক্তি নিজেই ঘুষ নিয়ে প্রকৌশলীদের সঙ্গে কথা বলছেন এবং টাকা গুনে গুনে তাদের দিচ্ছেন।
ভিডিওতে আরও দেখা যায়, ঠিকাদার জহিরের কাছ থেকে দুই প্রকৌশলী দেড় লাখ টাকা দাবি করেন। জহির এক লাখ ত্রিশ হাজার টাকা দিতে রাজি হন। পরে জহির পকেট থেকে টাকা বের করে গুনে প্রকৌশলীদের হাতে দেন।
ভিডিওতে প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের আলাপে শোনা যায়, এই এক লাখ ত্রিশ হাজার টাকা ভাগ করে নেবেন কাঞ্চন ও কুদ্দুস। ঘুষের আরও কিছু টাকা জেলা পরিষদের অ্যাকাউন্ট কর্মকর্তা গোপাল বোসকেও দিতে হবে বলতে শোনা যায় জহিরকে। ‘স্যারও পাবেন’ বলে আলাপচারিতায় উল্লেখ করা হয়। তবে এ স্যার কাকে সম্বোধন করা হয়েছে, তার নাম কেউ সে সময় বলেননি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলা পরিষদের তালিকাভুক্ত ঠিকাদার মো. জহির। তিনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান চন্দন শীলের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। জেলা পরিষদের অর্থায়নে একটি কাজ পেতে ঘুষ দেওয়ার এ ঘটনা ঈদুল আজহার কয়েকদিন আগের। তবে বৃহস্পতিবার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে জেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
ভিডিও ধারণকারী প্রকৌশলীদের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন করা সেই জহিরের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন।
ঘুষ নেওয়ার ভিডিও বিষয়ে জানতে চাইলে উপ-সহকারী প্রকৌশলী কাঞ্চন কুমার পালিত জানান, এই ভিডিওটি ১ বছরের আগের। জহির নামের ওই ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের কোনো ঠিকাদার না। জেলা পরিষদের একটি জরুরি মেরামত কাজের বিলের টাকা দেওয়ার সময় এই ভিডিও গোপনে ধারণ করা হয়ে বলে দাবি তার।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি চন্দন শীল বলেন, ভিডিওতে থাকা সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল কুদ্দুস বদলি হলেও উপসহকারী প্রকৌশলী কাঞ্চন কুমার পালিতের বিরুদ্ধে সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের সময়কাল থেকেই নানা অনিয়মের অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। এ বিষয়ে তদন্ত করা হবে। পাশাপাশি ঘুষ গ্রহণের ভিডিও সরকারের উচ্চ পর্যায়েও পাঠাবেন বলে জানান তিনি।
আরএ