দেশ টেলিভিশন লিমিটেড, কর্ণফুলী মিডিয়া পয়েন্ট, ৪২, শহীদ সাংবাদিক সেলিনা পারভীন সড়ক, মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
টেলিফোন: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৫৮, ৮৩৩২৯২২ ফ্যাক্স: +৮৮ (০২) ৮৩৩২৯৮১ মেইল: [email protected]
যাত্রীবাহী বাসে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) এক ছাত্রীর সঙ্গে শ্লীলতাহানির ঘটনায় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৩ মে) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে যবিপ্রবির প্রধান ফটকের সামনে যশোর চৌগাছা সড়কে তারা অবস্থান নেয়। এর পর সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখেন তারা। এ ঘটনায় জনসাধারণের চলাচল চরমভাবে ব্যহত হয়।
প্রায় পাঁচ ঘণ্টা চলমান অবরোধ কর্মসূচি পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জড়িতদের শাস্তির আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন।
জানা গেছে, গত ১২ মে যশোর থেকে চৌগাছাগামী লোকাল বাসে করে ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছিলেন। বাসটিতে চুড়ামনকাটি থেকে মাসুদ নামের এক যুবক উঠেন। বাসে উঠে যুবকটি ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়ায়। একপর্যায়ে যুবকটি ওই শিক্ষার্থীর গায়ে হাত দেয়। নিষেধ করার পরও মাসুদ হাত না সরালে ওই শিক্ষার্থীর আশপাশের যাত্রীরা মীমাংসার চেষ্টা করে। মীমাংসা না হওয়ায় পরবর্তীতে মাসুদের নামে ঘটনার দিন প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ জানান ওই শিক্ষার্থী।
এ নিয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করার জন্য প্রশাসনিক ভবনে অবস্থান করলে একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এসে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন উপস্থিত হয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীকে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে আন্দোলনকারীরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেয়। ঘটনার ২৪ ঘণ্টা অতিক্রম করলেও অপরাধী গ্রেপ্তার না হওয়ায় সোমবার দুপুর থেকে আবারও বিক্ষোভ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এরপর সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন।
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশ প্রশাসন একাধিকবার কথা বলে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। একই সাথে শিক্ষার্থীরা ৬ দফা দাবি তুলেন। দাবি গুলো হলো- শ্লীলতাহানির ঘটনা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীর বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, চৌগাছা বাস মালিক সমিতিকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা, যশোর-চৌগাছা রুটের সকল বাসের চালক এবং হেলপারকে যাত্রী নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে (নারী ও শিশু), উক্ত রুটের সকল বাসের মধ্যে সামনের সারিতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আসন বরাদ্দ রাখতে হবে।
ভবিষ্যতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে যশোর-চৌগাছা বাস মালিক সমিতিকে এর পূর্ণদায়ভার গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় যবিপ্রবি ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের বিবেচনাযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহন করবে, বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রতি ঘণ্টায় শহর থেকে (চাঁচড়া, মনিহার) শাটল বাস সার্ভিস ব্যবস্থা চালু করতে হবে এবং অতিদ্রুত এ দাবি কার্যকর করতে হবে। পরবর্তীতে বিকেলে সাড়ে ৫টার দিকে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন ঢাকা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে এসে শিক্ষার্থীদের বিচারের আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি তুলে নেন।
শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, শাটল বাস দেওয়ার সক্ষমতা এই মুহূর্তে আমাদের নেই। তবে অভিযুক্ত যেখানেই থাকুক তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের অন্যান্য দাবিগুলোর জন্য যশোর চৌগাছা বাস মালিক সমিতির সঙ্গে আমরা কথা বলে ব্যবস্থা করব।
এই বিষয়ে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান বলেন, অভিযুক্তকে আটকের জন্য পুলিশ কাজ করছে।
আরএ