সরকারি চাকরিজীবীরা ৫ শতাংশ সুদে ঋণ পাবেন— ২০ বছর মেয়াদী এ ঋণের পরিমান হবে ২০ থেকে ৭৫ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার সকালে সচিবালয়ে প্রতিষ্ঠাগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অর্থমন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জাফর উদ্দিন এ সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেন।
সোনালী, রুপালি, অগ্রণী, জনতা ও হাউস বিল্ডিং এ ঋণ দেবে। নভেম্বর থেকেই শুরু হচ্ছে এ উদ্যোগ।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, এ উদ্যোগের ফলে সরকারি চাকরিজীবীদের আবাসন সুবিধা পেতে সুবিধা হবে।
উদ্যোক্তারা বলেন, ঋণগ্রহিতা জীবিত অবস্থায় ঋণ শোধ করতে না পারলে পরবর্তী প্রজন্ম এ ঋণ শোধ করবে। আর আগ্রহীরা আগামী অক্টোবর থেকেই এ ঋণের জন্য আবেদন করতে পারবেন। নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে এই উদ্যোগ।
এদিকে, এর ফলে সরকারি চাকুরেদের আবাসন সুবিধা বৃদ্ধি পাবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
এ ঋণের জন্য ব্যাংক গড়ে ১০ শতাংশ হারে সুদ নেবে, তবে ঋণগ্রহীতাকে দিতে হবে ৫ শতাংশ। বাকিটা সরকারের পক্ষ থেকে পরিশোধ করা হবে ভর্তুকি হিসাবে।
সরকার ১৯৮২ সালে প্রথম সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য গৃহনির্মাণ ঋণ সুবিধা চালু করে। তখন ৪৮ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ টাকা গৃহনির্মাণ ঋণ হিসেবে পাওয়া যেত, যা ৪৮টি সমান কিস্তিতে পরিশোধ করতে হত।
এবারের নীতিমালায় বলা হয়েছে, বাড়ি (আবাসিক) নির্মাণের জন্য একক ঋণ, জমি ক্রয়সহ বাড়ি (আবাসিক) নির্মাণের জন্য গ্রুপ ভিত্তিক ঋণ, জমিসহ তৈরি বাড়ি কেনার জন্য একক ঋণ এবং ফ্ল্যাট কেনার জন্য ঋণ এই গৃহ নির্মাণ ঋণের আওতায় আসবে।
সরকারি চাকরিতে স্থায়ীভাবে নিয়োগপ্রাপ্তরাই কেবল এ ঋণের আবেদন করতে পারবেন; রাষ্ট্রায়ত্ত ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি, পৃথক বা বিশেষ আইন দ্বারা সৃষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা এ ঋণ পাওয়ার যোগ্য বিবেচিত হবেন না।
ব্যক্তিগত জমির ওপর বাড়ি তৈরি করতে চাইলে ঋণের আবেদনপত্রের সঙ্গে জমির মূল মালিকানা দলিল জমা দিতে হবে। মালিকানা পরম্পরার তথ্যও দিতে হবে।
সরকারি প্লট বা সরকার থেকে ইজারা নেওয়া জমিতেও বাড়ি তৈরি করা যাবে। সেক্ষেত্রে ঋণ আবেদনের সঙ্গে প্লটের বরাদ্দপত্রের প্রমাণপত্র এবং অন্যান্য দলিল জমা দিতে হবে।
ডেভেলপারকে দিয়ে বাড়ি তৈরি করালে জমির মালিক এবং ডেভেলপারের সঙ্গে নিবন্ধন করা ফ্ল্যাট বণ্টনের চুক্তিপত্র, অনুমোদিত নকশা, ফ্ল্যাট নির্মাণস্থলের মাটি পরীক্ষার প্রতিবেদন, সরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নির্ধারিত ছকে ইমারতের কাঠামো নকশা ও ভারবহন সনদ জমা দিতে হবে।
গৃহনির্মাণ ঋণের ক্ষেত্রে প্রথম কিস্তির ঋণের অর্থ পাওয়ার এক বছর পর এবং ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে ঋণের টাকা পাওয়ার ছয় মাস পর ঋণ গ্রহিতার মাসিক কিস্তি পরিশোধ শুরু হবে।
বর্তমানে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ২১ লাখের মত। নতুন এই গৃহঋণ দিতে সরকারকে বছরে এক হাজার কোটি টাকার বেশি ভর্তুকি দিতে হবে বলে হিসাব করেছে অর্থমন্ত্রণালয়।